বায়েজিদ আলী, স্টাফ রিপোর্টার চুয়াডাঙ্গা:-
চুয়াডাঙ্গা দর্শনা থানাধীন দর্শনা মোহাম্মদপুর সাকিনস্থ মৃত আরমান আলীর কন্যা ও সরুজ মিয়ার স্ত্রী ভিকটিম মিম আক্তার মঞ্জুরা(২৮)গত ২১.১০.২০২৩ খ্রিঃ তারিখ রাত অনুমান ০৮:৩০ ঘটিকায় ভিকটিম মিম আক্তার মঞ্জুরার স্বামী মামলার বাদী সুরুজ আলী বাড়ীতে এসে তার শ্বাশুড়ির নিকট জানতে পারে যে, অজ্ঞাতনামা দুস্কৃতিকারীরা তার স্ত্রী ও শ্যালক আলমগীরকে জোরপূর্বক অপহরণ করে পার্শ্ববর্তী মাঠের দিকে নিয়ে গেছে। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় মাঠের মধ্যে থেকে ভিকটিমের ভাই আলমগীরকে হাত-পা বাঁধা মাথায় সামান্য জখম অবস্থায় উদ্ধার করে।
বাদীর স্ত্রীকে খোঁজাখুজির একপর্যায়ে ২২.১০.২০২৩ খ্রিঃ সকাল অনুমান ০৫:৩০ ঘটিকার সময় দর্শনা মোহাম্মদপুর (মসজিদপাড়া)জনৈক মোমিনের বেগুন ক্ষেতের মধ্যে ভিকটিমকে গলাকেটে জবাই করা অবস্থায় দেখতে পেয়ে দর্শনা থানা পুলিশকে সংবাদ দেয়। ঘটনা সংক্রান্তে দর্শনা থানার মামলা নং-২২, তারিখ-২৩.১০.২০২৩ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়।
তাৎক্ষণিকভাবে চুয়াডাঙ্গা জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বর্ণিত ঘটনার সাথে জড়িত আসামী গ্রেফতারসহ মামলার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য জেলা গোয়েন্দা শাখা ও দর্শনা থানা, চুয়াডাঙ্গাকে নির্দেশ প্রদান করে।পুলিশ সুপারের নির্দেশে জনাব মোঃ নাজিম উদ্দীন আল আজাদ, পিপিএম-সেবা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) এবং জনাব জাকিয়া সুলতানা, সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল), চুয়াডাঙ্গার সহযোগিতায় জনাব ফেরদৌস ওয়াহিদ, অফিসার ইনচার্জ, জেলা গোয়েন্দা শাখার নেতৃত্বে সাব-ইন্সপেক্টর শহিদুল বাশার, সাজ্জাদ হোসেন, মুহিদ হাসান, সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর রজিবুল হক সঙ্গীয় ফোর্সসহ বাদী ও আশপাশের লোকজনের বক্তব্য পর্যালোচনা ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে বর্ণিত ঘটনার সাথে জড়িত আসামী মোঃ আলমগীর কবীর(৩২) কে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আসামী স্বীকার করে যে, ভিকটিম মিম আক্তার মঞ্জুরা তার আপন ছোট বোন।
ভিকটিমের বিবাহের পর থেকেই তার স্বামীসহ একত্রে তাদের বাড়ীতে বসবাস করত। ভিকটিম তার আপন খালাতো বোনের স্বামীর সাথে পরকিয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। আসামী আলমগীর তাকে পরকিয়া থেকে ফিরে আসতে বারবার সর্তক করে। কিন্তু ভিকটিম প্রেমের সম্পর্ক থেকে ফিরে আসতে নারাজ এবং প্রতিনিয়ত মোবাইল ফোনে কথা বলতে থাকে। আসামী আলমগীর রাগের বশবর্তী হয়ে ভিকটিম মিম আক্তার মঞ্জুরাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। আসামীর পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক গত ২১.১০.২০২৩ খ্রিঃ তারিখ সন্ধ্যা অনুমান ০৭:৩০ ঘটিকার সময় ভিকটিমকে কৌশলে বাড়ীর পার্শ্বে আম বাগানে ডেকে নিয়ে যায় এবং কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে ভিকটিমের নিজের ওড়না দিয়ে গলায় পেচিয়ে দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ বেগুন ক্ষেতে নিয়ে গিয়ে ধারালো দা দিয়ে গলাকেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
পরবর্তীতে ঘটনা অন্যদিক প্রবাহিত করার জন্য আসামী আলমগীর উক্ত দা দিয়ে নিজের মাথায় তিনটি পোচ দেয় এবং আমগাছে থাকা রশি নিয়ে নিজে নিজেই হাত-পা বেঁধে চিৎকার করতে থাকে। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করলে উক্ত অপহরণের নাটক সাজিয়ে বিভ্রান্ত করে। বর্ণিত ঘটনার বিষয়ে আসামী বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। গ্রেফতারকৃত আসামীর নাম ও ঠিকানাঃ মোঃ আলমগীর কবীর(৩২), পিতা-মৃত আরমান আলী, সাং-দর্শনা মোহাম্মদপুর, থানা-দর্শনা, জেলা-চুয়াডাঙ্গা। উদ্ধারকৃত আলামতঃ ক) হত্যার কাজে ব্যবহৃত ধারালো দা খ)রক্তমাখা জামা-কাপড়।
আজকের নলজুর /২৪অক্টোবর২৩/বিডিএন