মোঃ মুকিম উদ্দিন, জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:-
মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) দশ জনের বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছে দিরাই উপজেলার জগদল ইউনিয়নের জগদল গ্রামের মুজিবুর রহমানের ছেলে তালহা আহমেদ মামুন রনি।
মামলার আসামিরা হলেন, জগন্নাথপুর উপজেলার পাড়ারগাঁও গ্রামের মৃত ইছাক আলীর ছেলে শাহিন,মৃত রংভোল মিয়ার ছেলে হারুন মিয়া, মৃত লাল মিয়ার ছেলে সুজন মিয়া, মৃত এরশাদ উল্লার ছেলে তোতা মিয়া, তোতা মিয়ার ছেলে রাজ্জাক মিয়া, বালিকান্দি গ্রামের মৃত মিরাস উল্লার ছেলে আবুল কালাম, ইছগাঁও গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে রাজন মিয়া ও তাহার পিতা বাবুল মিয়া, শান্তিগঞ্জ উপজেলার লালুখাল গ্রামের ফয়জুর রহমান, ফয়জুর রহমান এর ছেলে রাসেল।
মামলার বিবরণে জানা যায়, মানবপাচারকারী ফয়জুর রহমান এর ছেলে রাসেল একজন লিবিয়া প্রবাসী। রাসেল তার পিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে লোক পাঠায়।ফয়জুর রহমান ভুক্তভোগী তালহা আহমেদ মামুন রনিকে লিবিয়া পাঠানোর প্রস্তার দিলে তালহা আহমেদ মামান রনিতাকে বিশ্বাস করে ৩,৫০,০০০/- টাকার চুক্তি হয় এবং লিবিয়ায় পৌঁচার পর টাকা পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত হয়। কথামতো তালহা আহমেদ মামুন ২০২২ সালের ১৮ এপ্রিল লিবিয়া পৌছে চুক্তি মত ৩,৫০,০০০/- টাকা তার ভাই হেলাল আহমদ এর মাধ্যমে ফয়জুর রহমান এর নিকট প্রদান করেন।
টাকা প্রদানের পর থেকে তার উপর শুরু হয় অমানুষিক শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন। মাসের পর মাস আটকিয়ে রেখে তার নিকট থেকে ধাপে ধাপে নগদ ও একাউন্টের মাধ্যমে মানবপাচার চক্রটি হাতিয়ে নেয় ৪১,৪৯,৬০০/- টাকা কোন এক সময় মানবপাচারকারী চক্র ত্রিপোলী পুলিশের কাছে তাকে ধরিয়ে দিলে বিগত ২৭-১১-২০২৩ ইং সালে ইউরোপীয় ইউনিউনের একটি সংস্থা আইওএম তাকে ফ্লাইটে বাংলাদেশে পাঠায়।
ভুক্তভোগী তালহা আহমেদ মামুন রনি বলেন, এই মানবপাচারকারী চক্রটি আমাকে ও আমার পরিবারকে নিঃস্ব করে দিয়েছে। লিবিয়ায় আমাকে আটকে রেখে মাসের পর মাস টাকার জন্য আমার ওপর শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন করেছে।এখনো তাদের নির্যাতনের দাগ আছে। তাদেরকে টাকা দিতে আমার সহায় সম্ভল সব কিছু বিক্রি করে আমি এখন নিঃস্ব হয়ে গেছি।আমি ছাড়া আরো অনেকের জীবন এই চক্রটি নষ্ট করে দিচ্ছে। আমি এই চক্রটির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
তালহা আহমেদ মামুন রনি’র ভাই হেলাল আহমদ বলেন, মানবপাচারকারী ফয়জুর রহমান ও তার ছেলে রাসেল আমার ভাইয়ের জীবন শেষ করে দিয়েছে। তাদের শারীরিক নির্যাতনে আমার ভাই এখন স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা করতে পারেনা। তাদের অমাবিক অত্যাচারে আমার ভাই এখন অচল। আমারা সকল সম্পত্তি বিক্রি করে আমরা এখন অসহায় হয়ে গেছি।
আর কাহারো জীবন যাতে এই চক্রটি নষ্ট করতে না পারে সেজন্য আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি। ভুক্তভোগী তালহা আহমেদ মামুন রনি’র পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন এডভোকেট মাসুদুল হক সর্দার সুমেল। এডভোকেট মাসুদুল হক সর্দার সুমেল বলেন, এমন হৃদয় বিদায়ক ঘটনা আমি এর আগে কখনো দেখিনি। আশা করছি বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে ভুক্তভোগী ন্যায় বিচার পাবেন।
আজকের নলজুর/২২মার্চ২৪/বিডিএন