মনজু বিজয় চৌধুরী, স্টাফ রিপোর্টার:-
কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি বনের অধীনে থাকা বাঁশমহালগুলো ইজারা প্রদান করা হচ্ছে না প্রায় একদশক ধরে। বাঁশমহাল ইজারা না হওয়ায় যত্রতত্র গাড়ি বোঝাই বাঁশ পাচার করা হচ্ছে। মহালেও পঁচে বিনষ্ট হচ্ছে বিপুল পরিমাণ বাঁশ। এতে বনবিভাগের স্থানীয় কিছু বন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পাচারকারীর চলছে পোয়াবারো। কিন্তু সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব।
জানা যায়, রাজকান্দি বন রেঞ্জের অধীনে কুরমা, আদমপুর ও কামারছড়া বনবিট রয়েছে। এই বিটগুলোর মধ্যে আদমপুর ও কুরমা বনবিটে রয়েছে বাঁশমহাল। বাঁশমহাল সমূহে বিভিন্ন প্রজাতির বিপুল পরিমাণ বাঁশ রয়েছে। প্রতি বছর মহালগুলো ইজারা দিয়ে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় করতো। তবে প্রায় একদশক ধরে বাঁশমহাল ইজারা দেয়া হচ্ছে না। দর কমানোর অজুহাত দেখিয়ে ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধার জন্য ইজারাদাররা সিন্ডিকেট করে মহাল নিলাম নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে একদিকে ঝাড়ে বাঁশ পঁচে ও মরে বিনষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে, প্রতিনিয়ত পিকআক, ট্রাক ও ঠেলাগাড়িতে করে বাঁশ পাচারের ঘটনা ঘটছে। ফলে বনবিভাগের স্থানীয় কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বাণিজ্য জমজমাট হয়ে উঠছে এবং সরকার লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে।
আদমপুর ও কুরমা বনবিট এলাকায় বসবাসরত কয়েকজন নিজেদের নাম গোপন রাখার শর্তে বলেন, কয়েক বছর ধরে ট্রাক, পিকআপ ও ঠেলাগাড়িতে করে মহাল থেকে বাঁশ পাচার হচ্ছে। স্থানীয় রেঞ্জ কর্মকর্তা, বনবিট কর্মকর্তা ও অফিসের অন্যান্যের যোগসাজসে বাঁশ পাচার হয়। কেউ অভিযোগ জানালে বনবিভাগ এগুলো বাড়িঘরের বাঁশ বলে তারা চালিয়ে দেন। রাজকান্দি রেঞ্জ অফিসের ফরেস্ট গার্ড আমিনুল ইসলাম রেঞ্জ কর্মকর্তার চেয়েও নিজে আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছেন। উচ্চ পর্যায়ে তার সখ্যতা রয়েছে বলে বনবিভাগের একজন স্টাফ জানান। পাঁচারের সাথে তাদের সম্পৃক্ততাও অঙ্গাঙ্গিভাবে রয়েছে।
ইতোপূর্বেও রাজকান্দি বনরেঞ্জ কর্মকর্তাসহ স্টাফদের বিরুদ্ধে গাছ, বাঁশ পাচারের অভিযোগ উঠে। তবে অভিযোগ বিষয়ে আমিনুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ সঠিক নয়। তিনি অফিসে সঠিকভাবে কাজ করেন। তাছাড়া বাঁশ পাচারের কোন ঘটনা ঘটেনি। রাজান্দি রেঞ্জের কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ইজারাদাররা বাঁশমহাল নিলাম নিচ্ছেন না বেশ কয়েক বছর ধরে। তবে ঠিক কত বছর ধরে নিলাম হচ্ছে না তা জানা নেই। মহাল ইজারা না হওয়ায় কিছু বাঁশ বিনষ্ট হচ্ছে তবে চুরি বা পাচারের ঘটনা ঘটছে না।
শ্রীমঙ্গলস্থ সহকারী বন সংরক্ষক মোহাম্মদ নাজমুল আলম দীর্ঘ সময় ধরে বাঁশমহাল ইজারা প্রদান না করার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ২০২১ সালে কমলগঞ্জে থাকাকালীন শুনেছি ৫/৭ বছর ধরে ইজারাদাররা বাঁশমহাল নিলাম ডাকছেন না। তবে ইজারা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। ইজাদাররা কিছু সমস্যা দেখাচ্ছেন এবং দর কমানোর দাবি করছেন। ফলে দীর্ঘ সময় ধরে ইজারা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে বাঁশ পাচার হচ্ছে না। তারপরও বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হবে।
আজকের নলজুর/০৫মার্চ২৪/বিডিএন
সম্পাদকঃ জুবায়ের আহমদ হামজা, বার্তা সম্পাদকঃ বিপ্লব দেবনাথ। অফিস: ব্যারিস্টার মির্জা আব্দুল মতিন মার্কেটে, জগন্নাথপুর, সুনামগঞ্জ।
Email:- ajkernaljur@gmail.com Mob:- 01880597469