বিপ্লব রায়,শাল্লা(সুনামগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ-
উপজেলার আনন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আঙিনায় ঢুকতেই দেখা গেল ওদের। বয়স সবার পাঁচ থেকে বারো। ভীষণ ব্যস্ত। কেউ ‘রোগী’দের নাম তালিকাভুক্ত করছে, কেউ গম্ভীর মুখে ওজন মাপছে, কেউ দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা করছে আবার কেউ কেউ ক্রিমি নাশক ঔষধ খাওয়াচ্ছেন।
এছাড়াও কোনো শারীরিক সমস্যা চিহ্নিত করতে পারলে সঙ্গে সঙ্গেই তা রোগীকে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রোগী তার অভিভাবকের মাধ্যমে নিজ নিজ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা নেবেন। পরে প্রধান শিক্ষক সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের কাছে সেবা নিতে পরামর্শ প্রদান করবেন।
এভাবেই উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে পাঁচ থেকে ১২ বছর বয়সী এক দল ক্ষুদে ডাক্তার তাদের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় আনন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই কার্যক্রম পরিচালনা করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিল্পী চৌধুরী।
আনন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী অর্তি রানী রায় ও চতুর্থ শ্রেনীর ছাত্রী নদীয়া সরকার জানায়, নতুন কার্যক্রমে তারা আনন্দিত। ভবিষ্যতে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন এখনই তাদের মাঝে দানা বাঁধছে। এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণীর তুলনামূলকভাবে চটপটে এবং বাকপটু শিক্ষার্থীদের ‘ক্ষুদে ডাক্তার’ বানাতে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। প্রতি শ্রেণী বা সেকশনের জন্য ৩ জনের একটি দল হিসেবে ১৫ শিক্ষার্থীর দল বিদ্যালয়ে কাজ করছে। ক্ষুদে ডাক্তারদের ৩ জন মিলে একেকটি দল একজন করে গাইড শিক্ষক দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিল্পী চৌধুরী বলেন, শিশুদের স্বাস্থ্য সচেতন করে তুলতে এ কার্যক্রম খুবই ফলপ্রদ। পাশাপাশি রোগজীবাণু সম্পর্কে ধারণা ও ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা হাতে-কলমে শিক্ষা পাচ্ছে তারা। সহপাঠীরাই পরস্পরের মাঝে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত জ্ঞানকে ছড়িয়ে দিচ্ছে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কে সচেতন করার পাশাপাশি মানুষের প্রতি সহমর্মিতা, মমত্ববোধ জাগরিত করে একজন প্রকৃত সমাজসচেতন, দেশপ্রেমিক ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে এ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এই ক্ষুদে ডাক্তার টিম থেকেই অনেকে ভবিষ্যতে প্রকৃত ডাক্তার হয়ে দেশ ও জনগণের সেবায় এগিয়ে আসবে বলে মনে করেন তিনি।
আজকের নলজুর/২৩মে২৪/বিডিএন