1. admin@ajkernaljur.com : admin :
জগন্নাথপুরে হাওরের নতুন পানিতে মাছ ধরার হিড়িক - আজকের নলজুর
২৭শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ১৩ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ| বর্ষাকাল| শুক্রবার| বিকাল ৩:০৮|

জগন্নাথপুরে হাওরের নতুন পানিতে মাছ ধরার হিড়িক

রিপোর্টার
  • আপডেটের সময় : রবিবার, জুন ৯, ২০২৪,
  • 296 দেখা হয়েছে

মোঃ মুকিম উদ্দিন, জগন্নাথপুর প্রতিনিধি:-

কেউ মাছ ধরছেন শখের বশে। আবার কেউবা জীবিকার তাগিদে। প্রতিদিনই তাদের জালে ধরা পড়ছে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ। ঝাঁকিজাল, টানা জাল, আর ঠেলা জাল দিয়ে এসব মাছ ধরা হচ্ছে। কেউ আবার বেড়জাল, কারেন্ট জালের সাহায্যে ধরছেন এসব মাছ।

জগন্নাথপুরের হাওর এলাকার খালবিল ও কৃষিজমিগুলোতে প্রবেশ করছে নতুন পানি। আর ওই পানিতে আয়োজন করে মাছ ধরছেন জেলেরা। বিরামহীনভাবে মাছ ধরতে হাওরের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছেন তারা।

বিভিন্ন উপজেলা থেকেও অনেকে হাওরে আসেন মাছ ধরতে। শিশু-কিশোর থেকে বৃদ্ধদের সবাই মাছ ধরতে ব্যস্ত।

কেউ মাছ ধরছেন জীবিকার তাগিদে, কেউ বা শখের বশে। প্রতিদিনই তাদের জালে ধরা পড়ছে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ। ঝাঁকি জাল, টানা জাল, আর ঠেলা জাল দিয়ে এসব মাছ ধরা হচ্ছে। কেউ আবার বেড়জাল, কারেন্ট জালের সাহায্যে ধরছেন মাছ।ট্যাংরা, চিকরা, পুঁটি, চিংড়ি, কৈ মাছই বেশি ধরা পড়ছে জালে। অনেকে দিনের বেলায়, আবার রাতের আঁধারে কোঁচ দিয়েও বড় মাছ শিকার করছেন। এ সময় মূলত ধরা পড়ে বোয়াল, রুই, শোল, গজার ইত্যাদি। বর্ষার আগেই নতুন পানির আগমন যেন আনন্দ নিয়ে এসেছে এসব জেলের চোখমুখে। হাওরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নিজেদের খাওয়াদাওয়ার চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করে বেশ ভালোভাবে চলছে জেলেদের পরিবার।

শান্তিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বেড়জাল নিয়ে হাওরে মাছ ধরতে এসেছেন পেশাদার জেলেরা। একাধিক জেলেরা জানান, প্রতিবছরই দুই মৌসুমে মাছ ধরতে হাওরে আসেন তারা। প্রথমে আসেন জ্যৈষ্ঠ মাসে যখন হাওরে নতুন পানি আসতে থাকে। পরেরবার আসেন কার্তিক মাসে যখন পানি নামতে শুরু করে। বছরের এই দুটি সময়েই সবচেয়ে বেশি মাছ ধরা পড়ে তাদের জালে।

জেলেরা বলেন, ‘মেঘের সময় (বৃষ্টিতে) বেশি মাছ ধরা পড়ে। ঠাডা পড়লে (বজ্রপাতে) মাছ সড়কের দারে আইয়া পড়ে। তখন জালটা ফালাইলেই আর মিস নাই। বালা কইরা কয়েকটা খেউ দিতে পারলেই অয়।

হাওরে মাছ ধরতে এসে বৃষ্টি-বজ্রপাতের মধ্যে মাছ ধরতে ভয় পান কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তাহারা বলেন, ‘মরণের ভয় করলে কি আর মাছ মারন যাইব? মাছ মারার শখ থাকলে মরণের চিন্তা করলে অইত না। শখের বসে বাবার সঙ্গে হাওরে মাছ ধরতে এসেছে উবাইদুল্লাহ তারেক।

তারেক জানায়, টানা জাল দিয়ে মাছ ধরে তারা। প্রায় তিন কেজির মতো মাছ পেয়েছে। মাছ ধরতে এসে বেশ খুশি সে।তারেক বলে, ‘আব্বা প্রতিদিন মাছ মারে। এই মাছে আমরার পরিবারের কাওয়া-দাওয়াও চলে। আজকে আমিও আইছি আব্বার লগে।

তারেকের বাবা গিয়াসউদ্দীন পেশায় জেলে। তিনি বলেন, ‘আমরা ফুরু থাকতে জ্যৈষ্ঠ মাসে কিছু সময় মাছ মারলে ঝাঁকা দিয়া মাথাত কইরা নেওয়ন লাগছে। আর অখন সারা দিন ঘুইরাও একটা বাজারের ব্যাগ ভরতাম ফারি না। আমরা ফুরু থাকতে যেই মাছ দেখছি তার ১০০ ভাগের এক ভাগও অখন নাই।

গিয়াস বলেন, ‘মাছ কমনের কারণ হইছে ডিম ছাড়নের সময় মাইনষে মাছ মাইরা শেষ করে। আবার বিনজাল নামের একটা জাল আছে, যেইটা দিয়া স্রোতের মাইঝে নদীতে ফাতে (জাল বিছানো)। এর লাইগ্যাও মাছ কইম্মা যাইতেছে।

এই জালটা কারেন্ট জালের থাইকাও ভয়ংকর। একবার যেই মাছটা ডুখে এইটা আর বারোই তো ফারে না। ফাতার তিন দিন ফরে তুলে এই জাল। বড় মাছের আশায় ফাতলেও ছোট মাছটি যে ডুকে এইটি শেষ। একবার ডুকলে জালের ভিতরেই পইচ্চা শেষ হয়। তবে জেলেরা জানান, জীবিকা নির্বাহের বিকল্প কোনো উপায় না থাকায় এসব মাছ ধরতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

আজকের নলজুর/০৯জুন২৪/বিডিএন

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরণের আরো খবর
© All rights reserved © 2023 আজকের নলজুর
Design and developed By: Syl Service BD