1. admin@ajkernaljur.com : admin :
০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ এর মধ্যে স্থায়ীকরণ না হলে কঠোর আন্দোলন: বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির আউটসোসিং ৮৭ কর্মচারীর চাকুরী স্থায়ীকরনের দাবী - আজকের নলজুর
২৭শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ১৩ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ| বর্ষাকাল| শুক্রবার| ভোর ৫:০৩|

০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ এর মধ্যে স্থায়ীকরণ না হলে কঠোর আন্দোলন: বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির আউটসোসিং ৮৭ কর্মচারীর চাকুরী স্থায়ীকরনের দাবী

রিপোর্টার
  • আপডেটের সময় : সোমবার, আগস্ট ২৬, ২০২৪,
  • 101 দেখা হয়েছে

দিনাজপুর প্রতিনিধি:-

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে কর্মরত আউটসোর্সিং ৮৭ কর্মচারীর চাকুরী স্থায়ীকরণ আগামী ০২ সেপ্টেম্বর/২০২৪ এর মধ্যে করা না হলে কঠোর আন্দোলনের ঘোষনা কর্মচারীদের। দেশের উত্তর অঞ্চলের দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে কর্মরত আউটসোর্সিং ৮৭ কর্মচারী তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে অতি কষ্টে দিন যাপন করেছে। মহামান্য হাইকোর্টে রীট পিটিশন নম্বর-১২৮৮/২০১৮ এর রায় বাস্তবায়ন প্রদান করেন। এর পরেও খনি কর্তৃপক্ষ তাদেরকে চাকুরীতে স্থায়ীকরণ করছে না।

আউটসোর্সিং ৮৭ কর্মচারীগনের পক্ষে মোঃ সোহেল রানা জানান, আমরা বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানী লিমিটেড (বিসিএমসিএল)-এ আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দীর্ঘ প্রায় ২০-২৫ বছর যাবৎ দক্ষতা ও সুনামের সহিত কাজ করে আসছি। কয়লা খনির কারণে জমি অধিগ্রহণের ফলে আমাদের অনেকেই বসত-ভিটা, ফসলি জমি, মসজিদ, মাদ্রাসা এমনকি বাব-দাদার কবরস্থান পর্যন্ত হারিয়েছি।

গত ১৫ মে ২০০৯ তারিখে বিসিএমসিএল কর্তৃপক্ষ এবং ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সমঝোতা স্মারকের ৮ ধারায় ক্ষতিগ্রস্তদের কয়লা খনিতে চাকুরীর ক্ষেত্রে সরকারি নীতিমালা শিথিল করে চাকুরী প্রদানের সুপারিশ করার প্রতিশ্রæতি দেয় । প্রথম হতেই অত্র কোম্পানিতে ক্ষতিগ্রস্তদের স্থায়ী নিয়োগ দেয়ার কথা থাকলেও অদ্যবধি আউটসোর্সিং কর্মচারী হিসেবে রেখে সকল সুযোগ-সুবিধা হতে বঞ্চিত করছেন খনি কর্তৃপক্ষ। আমাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি ও প্রতিষ্ঠানের সার্বিক উন্নয়ন সাধিত হলেও শ্রমিকদের ভাগ্যের কোন উন্নয়ন সাধিত হয়নি। চাকুরী স্থায়ীকরণের জন্য বারংবার অনুরোধ করা হলেও কর্তৃপক্ষ প্রতিবার শুধুমাত্র মৌখিক প্রতিশ্রæতি ব্যতিত কোন প্রকার কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

ইতঃপুর্বে কখনো ক্যাজুয়াল, কখনো কাজ নাই মজুরী নাই ভিত্তিতে আবার কখনো আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে নিয়োজিত থেকে খনির কাজে প্রশিক্ষিত ও অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন তাঁদের অনেকের বয়স বেশি ও শিক্ষাগত যোগ্যতা কম থাকায় বয়স ও শিক্ষাগতা যোগ্যতা শিথিল করে স্থায়ী নিয়োগ প্রদান করা হয়।

তারই ধারাবাহিকতায় ১৮-০১-২০০৯ তারিখে পুনরায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। উক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির অধীনে ৩১-০৮-২০১০ তারিখে শুধুমাত্র কর্মকর্তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলেও অজানা কারণে কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়াটি বন্ধ রাখা হয়।

অবশেষে নিরুপায় হয়ে আউটসোর্সিং-এর মাধ্যমে কর্মরত ৮৭ (সাতাশি) জন কর্মচারী চাকুরী স্থায়ীকরণের লক্ষ্যে মহামান্য হাইকোর্টে উপর্যুক্ত দলিল ও প্রমাণাদিসহ রীট পিটিশন (যার নম্বর-১২৮৮/২০১৮) দায়ের করি। হাইকোর্টের মহামান্য বিজ্ঞ বিচারপতিগণ দাখিলকৃত কাগজপত্রাদি অবলোকনপূর্বক উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শ্রবণ শেষে গত ০৮-১০-২০১৮ তারিখে আমাদের বয়স ও শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করে ২০০৯ সনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির অধীনে সেই সময়ের বিদ্যমান সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী কর্মচারী পদে স্থায়ী নিয়োগে অগ্রাধিকারপূর্বক নিয়োগ প্রক্রিয়াটি ৩ (তিন) মাসের মধ্যে সম্পন্ন করার নির্দেশনা প্রদান করেন।

গত ৩১-০৭-২০১৯ তারিখে বিসিএমসিএল কর্তৃক মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে আপীল বিভাগে সিপিএলএ নম্বর-২৩২৭/২০১৯ দায়ের করলে, মহামান্য আপিল বিভাগ গত ৩০-০৪-২০২৩ তারিখে হাইকোর্ট-এর আদেশ বহাল রেখে সিপিএলএ ডিসমিস করে দেয়। পরবর্তীতে বিসিএমসিএল কর্তৃক মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে গত ১৯-০৬-২০২৩ তারিখে রিভিউ পিটিশন নম্বর-২০০/২০২৩ দায়ের করলে মহামান্য আপিল বিভাগ গত ২৫-০১-২০২৪ তারিখে পূর্বের আদেশ বহাল রেখে রিভিউ ডিসমিস করে দেয়। এরপরও খনি কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে স্থায়ী নিয়োগ প্রদান করেন নাই।

বাংলাদেশের একমাত্র ভূগর্ভস্থ কয়লা উত্তোলনকারী কেম্পানিতে আমরা যারা আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে দীর্ঘদিন নিয়োজিত থেকে কয়লা খনির কাজে প্রশিক্ষিত ও অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। কিন্তু চাকুরী স্থায়ী না হওয়ায় আমরা প্রভিডেন্ট ফান্ড, পেনশন, ইনক্রিমেন্ট, প্রফিট বোনাস ও ডাস্ট এলাউন্স সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা হতে বঞ্চিত।

উল্লেখ্য যে, অত্র কোম্পানির কাজের ধরন ও প্রকৃতি ভিন্নতর হওয়ায় আমরা ইতঃপূর্বে সরকার কর্তৃক ঘোষিত পে-স্কেল (২০১৫) অনুযায়ী বেতন-ভাতা ভোগ করলেও বর্তমানে ক্ষেত্রমতে আমাদের পদবী পরিবর্তন ও বেতন-ভাতা কমে যাওয়ায় আমরা আর্থিক ভাবে খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হই, যা সংবিধানের ১৫-এর পরিপন্থি। বিসিএমসিএল এর সেই সময়ে বিদ্যমান সাংগঠনিক কাঠামো (অর্গানোগ্রাম) অনুযায়ী কর্মচারী পদে বহু স্থায়ী পদ শুন্য থাকা সত্ত্বেও, আমাদেরকে দীর্ঘদিন যাবৎ কখনো ক্যাজুয়াল, কখনো কাজ নাই মজুরী নাই ভিত্তিতে এবং পরবর্তীতে আউটসোর্সিং হিসাবে রেখে, বিনা কারণে আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠানকে বিপুল পরিমান কমিশন প্রদান করা হচ্ছে।

চাকুরির কোন স্থায়িত্ব না থাকায় যে কোন সময়ে বিনা কারণে চাকুরিচ্যুত হওয়ার বিরাট ঝুঁকিতে থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে আমরা চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে দিনাতিপাত করছি। সম্প্রতি আউটসোর্সিং তথাকথিত দাস প্রথার মাধ্যমে কর্মরত কর্মচারী জনাব মোঃ আব্দুর রউফ, হেলপার, পিতা-লুৎফর রহমান, গ্রাম-উত্তর সুজাপুর, ডাকঘর+থানা-ফুলবাড়ী, দিনাজপুর গত ০৯-০৮-২০২৪ তারিখে অবসরকালীন সুবিধা না থাকায় খালি হাতে ঘরে ফিরে যাওয়ার ১০ দিনের মধ্যেই আর্থিক দুশ্চিন্তার কারণে হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়ে ২০-০৮-২০২৪ তারিখে মৃত্যু বরণ করেন, যা কোন ভাবে কাম্য নয়।

এমতাবস্থায়, আউটসোর্সিং-এর মাধ্যমে নিয়োগ প্রাপ্ত কর্মচারীগণের দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতা, অর্থনৈতিক, সামাজিক, পারিবারিক দুরবস্থা এবং অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে মহামান্য হাইকোর্টের রীট পিটিশন (যাহার নম্বর ১২৮৮/২০১৮) এবং সুপ্রিম কোর্টের রায় বাস্তবায়নপূর্বক অত্র প্রতিষ্ঠানের সার্বিক উন্নয়নে আরো গতিশীল ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য স্থায়ী নিয়োগের মাধ্যমে আউটসোর্সিং-এর মাধ্যমে কর্মরত ৮৭ জন রিট আবেদনকারীর পক্ষে মহামান্য হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নে জরুরী ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ দাবী জানান।

আগামী ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ এর মধ্যে তাদের চাকুরী স্থায়ীকরণের বিষয়ে দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। অন্যথায় বিক্ষোভ সমাবেশ, মানববন্ধন, কর্মবিরতিসহ কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করবেন। এজন্য আইন শৃংখলা বিঘিœনত হলে তার দায়ভার খনি কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে বলেও তারা জানান।

আজকের নলজুর/২৬আগস্ট২৪/বিডিএন

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরণের আরো খবর
© All rights reserved © 2023 আজকের নলজুর
Design and developed By: Syl Service BD