1. admin@ajkernaljur.com : admin :
বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের ১৫তম মৃত্যুবাষিকী আজ - আজকের নলজুর
২৭শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ১৩ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ| বর্ষাকাল| শুক্রবার| দুপুর ১:৪৩|

বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের ১৫তম মৃত্যুবাষিকী আজ

রিপোর্টার
  • আপডেটের সময় : বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৪,
  • 94 দেখা হয়েছে

আলাউর রহমান, সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:-

একুশে পদকপ্রাপ্ত কিংবদন্তি বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০০৯ সালের (১২ সেপ্টেম্বর) আজকের এই দিনে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পরপারে পাড়ি জমান তিনি। কেন পিরিতি বাড়াইলা রে বন্ধু, বসন্ত বাতাসে সইগো, বন্দে মায়া লাগাইছে, আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম, গাড়ি চলে না সহ অসংখ্য কালজয়ী গানের রচয়িতা তিনি।

শাহ আবদুল করিম ১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভাটির এলাকা সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার তাড়ল ইউনিয়নের উজানধল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া এই কালজয়ী শিল্পীর বাল্যকাল ছিলো নিদারুণ কষ্টের। পারিবারিক অভাব অনটনের কারনে কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেন নি। তবে দারিদ্র্যের সাথে যুদ্ধ করে বেড়ে ওঠা বাউল সম্রাটের সংগীতের প্রতি দুর্বলতা ছিলো ছেলেবেলা থেকেই। ছোটবেলা থেকেই একতারা ছিলো তার নিত্যসঙ্গী।

বাউল সম্রাটের বয়স যখন ১২, তখন রাখালের কাজ ছেড়ে পার্শ্ববর্তী ধলবাজারের এক মুদি দোকানে কাজ নেন। দিনে চাকরি আর রাতে হাওড়-বাঁওড়ে ঘুরে গান গাইতেন। ওই সময় গ্রামের নৈশবিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও পড়াশোনা হয়নি তার। গ্রামের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাউল, ভাটিয়ালি ও পালাগান করতেন তিনি। আর্থিক অসচ্ছলাতার কারণে কৃষিকাজে বাধ্য হলেও কোনো কিছুই তাকে গান রচনা থেকে বিরত রাখতে পারেনি। তার মরমি কথা, হৃদয় ছোঁয়া সুর তাকে হাওরের রাখাল বালক থেকে বাউল সম্রাটের আসনে বসিয়েছে।

তিনি জীবনভর তার গানে অবহেলিত-বঞ্চিত মানুষের মুক্তির কথা বলে গেছেন। তার গানে যেমন প্রেম-বিরহ ছিল, তেমনি ছিল খেটে খাওয়া মানুষের কথা। একই সঙ্গে আধ্যাত্মিক ভাবনাও রয়েছে তার সৃষ্টিকর্মের বিশাল অংশজুড়ে। মানুষের জীবনের সুখ, প্রেম-ভালোবাসার মনের কথা ছোট ছোট বাক্যে প্রকাশ করেছেন বাউল সুরে। এর পাশাপাশি তার গান কথা বলে অন্যায়-অবিচার, কুসংস্কার আর সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে। তিনি তার গানের অনুপ্রেরণা পেয়েছেন ফকির লালন শাহ, পাঞ্জু শাহ এবং দুদ্দু শাহর দর্শন থেকে। তিনি শরীয়তী, মারফতি, নবুয়ত, বেলায়াসহ সবধরনের বাউল গান এবং গানের অন্যান্য শাখার চর্চাও করেছেন। তিনি তার কালজয়ী গানের জন্য একুশে পদকসহ নানা সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।

এছাড়ও শাহ আব্দুল করিম লিখেছেন ও সুর দিয়েছেন ১৬ শতরও বেশি গানে, যেগুলো সাতটি বইয়ে গ্রন্থিত আছে। বাংলা একাডেমির উদ্যোগে তার ১০টি গান ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে। তার প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে আফতাব সঙ্গীত, গণ সঙ্গীত, কালনীর ঢেউ, ধলমেলা, ভাটির চিঠি, কালনীর কূলে, শাহ আব্দুল করিম রচনাসমগ্র উল্লেখযোগ্য।

সুনামগঞ্জের কালনী নদীর তীরে বেড়ে উঠা শাহ আব্দুল করিমের গান শুরুতেই ভাটি অঞ্চলে জনপ্রিয় হলেও শহরের মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা পায় তার মৃত্যুর কয়েক বছর আগে।

শাহ আব্দুল করিম ১২ সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সালে ৯৩ বছর বয়সে সিলেটের সিলেটের নুরজাহান পলি ক্লিনিকে মৃত্যুবরণ করেন। তার সৃষ্টি করা অসংখ্য গান এখানো পূর্বের মতোই সংগীতপ্রেমীদের মুখে মুখে শোভা পাচ্ছে। বাউল সম্রাটের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আজ শাহ আবদুল করিম পরিষদের আয়োজনে তার নিজ গ্রামে দোয়া ও করিম গীতি আসরের আয়োজন করা হয়েছে। দিনব্যাপি এই অনুষ্ঠানে সকলের দোয়া ও উপস্থিতি কামনা করেছেন বাউলের একমাত্র সন্তান শাহ নুরজালাল।

আজকের নলজুর/১২সেপ্টেস্বর২৪/বিডিএন

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরণের আরো খবর
© All rights reserved © 2023 আজকের নলজুর
Design and developed By: Syl Service BD