সালেহ আহমদ (স’লিপক):-

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ৭নং রাজঘাট ইউপিতে অতিদরিদ্রদের জন্য সরকারের ভর্তুকির ১৫ টাকা কেজির “খাদ্যবান্ধব কর্মসূচী” এর চাল ভোক্তাদের মাঝে বিতরণ না করে দীর্ঘদিন ধরে এক ইউপি সদস্য নিজে আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। এব্যাপারে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ৭নং রাজঘাট ইউনিয়নের ৪জন নারী ভুক্তভোগী চা শ্রমিক।

অভিযোগে জানাযায়, শ্রীমঙ্গল উপজেলার ৭নং রাজঘাট ইউপির ২নং ওয়ার্ড সদস্য সেলিম হক ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ভুক্তভোগীদের নাম তালিকায় থাকা সত্ত্বেও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর এই চাল অভিযোগকারীদেরকে না দিয়ে ইউপি সদস্য নিজেই আত্মসাৎ করছেন। এমন কি চালের কার্ড পর্যন্ত ভুক্তভোগীদেরকে দেননি। অতিদরিদ্রদের এসব চাল তার মনগড়া আত্মীয় স্বজনদের নাম তালিকায় দেখিয়ে তিনি নিজেই দীর্ঘদিন ধরে মোটা অংকে টাকায় দোকানে বিক্রি করছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ৭নং রাজঘাট ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সেলিম হক আওয়ামী লীগের ক্ষমতার দাপট খাটিয়ে খাদ্যবান্ধব চালের ডিলার এনেছেন তার আপন বড় ভাইয়ের ছেলে ফয়েজের নাম ব্যবহার করে। আর পরিচালনার ভার গ্রহণ করছেন তিনি নিজেই। এসব চাল তার বাসার ভিতর নিয়মিত গেইট আটকিয়ে কিছু সংখ্যক মানুষের মাঝে বিতরণ করে সিংহভাগ চালের বস্তাগুলো করছেন উধাও। এতে ১৫ টাকার কেজির চাল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রকৃত দরিদ্ররা। আর সুবিধা পাচ্ছে ইউপি সদস্য নিজে। অথচ দেশের অতি দরিদ্র পরিবারের খাদ্য সমস্যার কথা চিন্তা করে এই ১৫ টাকা কেজিতে চাল বিক্রি শুরু হয়। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য মহৎ হলেও দূর্নীতির কারণে তা পুরোপুরি কার্যক্রম হচ্ছে ব্যাহত বলে জানান এলাকার ভুক্তভোগী মানুষ।

এছাড়াও এলাকার ৪জন নারী চা-শ্রমিক মঙ্গলা তাঁতী, বিনতা তাঁতী, সত্য তাঁতী, হাসিনা বেগম জানান, আমাদের নামে রয়েছে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর কার্ড। তালিকায় রয়েছে আমাদের নাম। নিয়মিত চাল উঠানো হলেও পাইনি আমরা চালের দেখা। আমাদের চালের কার্ডটি পর্যন্ত সেলিম মেম্বার দেননি। কার্ডের জন্য তার বাড়ীতে গেলে নানান অজুহাত দেখিয়ে আমাদেরকে বিদায় করে দেন। গরিবদের হক নিয়ে যারা নয়ছয় করে, দূর্নীতি করে, তাদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। অচিরেই যেন সুষ্টু তদন্ত করে ইউপি সদস্যের এই অবৈধ বেনামী খাদ্যবান্ধব ডিলার বাতিল সহ উনাকে আইনের আওতায় নেওয়া হয় এমন দাবী তাদের।

এব্যাপারে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবু তালেব বলেন, আমি অভিযোগ পেয়েছি রাজঘাট ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ড মেম্বার সেলিম হকের বিরুদ্ধে। এব্যাপারে অপরাধী যে হোক তাকে ছাড় দিবো না। আমি রাজঘাটের চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে তদন্ত কমিটি গঠন করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবো।

আজকের নলজুর/২৭সেপ্টেস্বর২৪/বিডিএন