1. admin@ajkernaljur.com : admin :
প্রবীণদের যথাযথ সম্মান এবং তাদের শারীরিক-মানসিক প্রশান্তি নিশ্চিত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব- সিলেট জেলা প্রশাসক - আজকের নলজুর
২৭শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ১৩ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ| বর্ষাকাল| শুক্রবার| বিকাল ৩:০১|

প্রবীণদের যথাযথ সম্মান এবং তাদের শারীরিক-মানসিক প্রশান্তি নিশ্চিত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব- সিলেট জেলা প্রশাসক

রিপোর্টার
  • আপডেটের সময় : মঙ্গলবার, অক্টোবর ১, ২০২৪,
  • 56 দেখা হয়েছে

সালেহ আহমদ (স’লিপক):-

মর্যাদাপূর্ণ বার্ধক্য: বিশ্বব্যাপী প্রবীণ পবিচর্যা ও সহায়তা ব্যবস্থা শক্তিশালী করণ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. শের মাহবুব মুরাদ বলেন, সিনিয়র সিটিজেন হিসেবে পরিচিত প্রবীণরা সমাজের গুরুজন। বিদ্যমান সভ্যতা-প্রগতি সবই গঁড়ে ওঠেছে প্রবীণদের হাতে। আর প্রবীণদের উত্তরাধিকার হচ্ছে নবীনরা। প্রবীণদের যথাযথ সম্মান দেয়া, তাদের শারীরিক-মানসিক প্রশান্তি নিশ্চিত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। কিন্তু আমরা সেই দায়িত্ব পালন করতে পারছি না। জীবন-বাস্তবতার তাগিদে আমাদের ঐতিহ্য একান্নবর্তী পরিবারগুলো ভেঙে খান খান হয়ে যাচ্ছে। এর শিকার হচ্ছেন পরিবারের প্রবীণ ব্যক্তিরাই।

তিনি বলেন, সারা দেশ থেকে সিলেট একটি ব্যতিক্রমী অঞ্চল। এখানের মানুষ প্রবীণদের সম্মান করেন। এজন্য সিলেটে বৃদ্ধাশ্রম নেই। এখানের পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন সুদৃঢ়।

তিনি আরো বলেন, আমাদেও জীবনের পথ চলায় প্রবীণদের অবদান রয়েছে। আমাদের জন্যই আগামী প্রজন্মকে এ ব্যাপারে সচেতন করে গঁড়ে তুলতে হবে। যাতে তারাও এ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের সেবা করতে পারে। সিলেট ওসমানী হাসপাতালে প্রবীণদের বিনামূল্যে যাতে চিকিৎসা সেবা দেয়া যায় এর ব্যবস্থা করা হবে। আইনী সুযোগ থাকলে কর্মক্ষমদের সচল রাখতে গবেষণাসহ বিভিন্ন কাজে সম্পৃক্ত করা যায় কিনা সে ব্যাপরেও আমরা চিন্তা করে দেখবো।

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সকাল ১০টায় সিলেটের জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা কার্যালয় আয়োজিত ৩৪তম আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবসে আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক মো. শের মাহবুব মুরাদ এসব কথা বলেন।

প্রবীণ হিতৈষী সংঘ ও জরা বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠান সিলেট এর সভাপতি এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ব বিদ্যালয়ের সাবেক রেজিষ্ট্রার জামিল আহমদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোবারক হোসেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমান খান, সিলেট সিভিল সার্জন অফিসের সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা সুজন বনিক, প্রবীণ হিতৈষী সংঘ ও জরা বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠান সিলেট এর সহ-সভাপতি বিশিষ্ট কলামিস্ট সাংবাদিক আফতাব চৌধুরী, দৈনিক পূণ্যভূমির সম্পাদক আবু তালেব মুরাদ, সিলেট জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সাবেক উপ-পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি গুলজার আহমদ হেলাল।

সিলেট জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হকের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য বখেন সিলেট জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. আব্দুর রফিক। বক্তব্য রাখেন সমাজসেবী এডভোকেট চৌধুরী আতাউর রহমান, রহমানিয়া প্রতিবন্ধী কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি আাতাউর রহমান খান সামছু।

শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন সিলেট ওসমানী হাসপাতাল সমাজসেবা অফিসার খলিলুর রহমান। গীতা পাঠ করেন প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা সিদ্ধার্থ শংকর রায়।

বক্তারা বলেন, বার্ধক্যে উপনীত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে দিন দিন। এদের স্বস্থিদায়ক জীবনযাপনের জন্য চাই যথাযথ ব্যবস্থা। আবহমান বাংলার সমাজ ব্যবস্থায় মা, বাবা, দাদা, দাদী, ভাই, বোনসহ একান্নবর্তী পরিবারে বসবাসের একটা রেওয়াজ রয়েছে। আর এই ধরনের পরিবারে একে অন্যের সহযোগিতায় এগিয়ে আসা একটা নৈতিক দায়িত্ব হিসেবে মনে করা হয়। বিশেষ করে বৃদ্ধ এবং শিশুরা অসুখ বিসুখ সহ নানা অসুবিধায় পরিবারের অন্য সদস্যদের সেবা ও সহযোগিতা পেয়ে থাকে। কিন্তু ইদানীং ভেঙে গেছে সেই একান্নবর্তী পরিবার। ভেঙে গেছে পারিবারিক বন্ধন। এই প্রেক্ষাপটে অসহায়-দরিদ্র প্রবীণদের বাসস্থান, চিকিৎসা কিংবা খাদ্যের মতো মৌলিক চাহিদা পূরণে এগিয়ে আসতে হবে রাষ্ট্রকে।

এক্ষেত্রে উল্লেখ করা যায় যে, সরকার প্রবীণদের জন্য চালু করেছে বয়স্ক ভাতা। এর পরিমাণ বাড়ানোর পাশাপাশি সুবিধাভোগিদের সংখ্যাও বাড়াতে হবে। গ্রামীণ এলাকার প্রবীণদের জন্য প্রবীণ ক্লাব করারও উদ্যোগ নেয়া যায়। এছাড়া জাতীয় প্রবীণ নীতিমালা (২০১৩) অনুযায়ি ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের ‘সিনিয়র সিটিজেন’ হিসেবে ঘোষণা করে তাদের কার্ড প্রদানের উদ্যোগ নেয়া দরকার বলে আমরা মনে করি। চিকিৎসা ব্যবস্থায় উন্নতির কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বাড়ছে প্রবীণ ব্যক্তিদের সংখ্যা। ১৯৭৪ সালে যেখানে প্রবীণ ব্যক্তির সংখ্যা ছিলো ৪১ লাখ, এখন তা দাঁড়িয়েছে এক কোটি ৫৩ লাখের ওপরে। একটা দেশের মোট জনসংখ্যার দশ থেকে ১২ ভাগ প্রবীণ হলে সেই দেশকে বার্ধক্য জনসংখ্যার দেশ হিসেবে গণ্য করে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা। আমাদের দেশ যাচ্ছে সেদিকেই। কিন্তু এখানে প্রবীণরা প্রতিনিয়ত নানামুখি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। প্রবীণদের একটা বড় অংশই জীবনের শেষ সময়টুকু সুখে শান্তিতে নির্বিঘ্নে কাঁটাতে পারছেন না।

আজকের নলজুর/০১অক্টোবর২৪/বিডিএন

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরণের আরো খবর
© All rights reserved © 2023 আজকের নলজুর
Design and developed By: Syl Service BD