1. admin@ajkernaljur.com : admin :
ঠিকাদার রাজিবের ক্ষমতার নৈরাজ্যে চরম দুর্ভোগে জগন্নাথপুর উপজেলাবাসী - আজকের নলজুর
২৭শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ১৩ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ| বর্ষাকাল| শুক্রবার| ভোর ৫:২৪|

ঠিকাদার রাজিবের ক্ষমতার নৈরাজ্যে চরম দুর্ভোগে জগন্নাথপুর উপজেলাবাসী

রিপোর্টার
  • আপডেটের সময় : সোমবার, ডিসেম্বর ২, ২০২৪,
  • 75 দেখা হয়েছে

মোঃ মুকিম উদ্দিন জগন্নাথপুর প্রতিনিধি:-

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় সরকারী তিন দপ্তরে ৯ কোটি টাকার কাজে গাফিলতি, অবহেলা ও কাজ ফেলে রেখে জনদুর্ভোগ তৈরির অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্টান রাজিব এন্টারপ্রাইজ অথাৎ রাজিব আহমেদ নামে এক ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। ওই ঠিকাদার বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের এক প্রভাবশালী নেতাকে পুঁজি করে আত্মীয়তার ও ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কাজ বন্ধ রাখেন। এখন তাকে ঐ কাজের এলাকায় দেখা যাচ্ছেন না। কর্মকর্তারা জানান, বিগত আওয়ামিলীগ সরকারের আমলে ঠিকাদার রাজিব আহমদ সরকারি দলের দাপট দেখাতেন। কথায় কথায় জেলা আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতাদের আত্মীয় পরিচয় দিতেন। তার কাছ থেকে কাজ আদায় করতে রীতিমত ঝগড়া করতে হতো।

জগন্নাথপুর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের দায়িত্বশীলরা জানান, উপজেলা এলজিইডির অধীনে আশারকান্দি ইউনিয়নের দাওরাই উত্তর হাওর সড়কের সোয়া এক কিলোমিটার অংশে আরসিসি কাজের অনুমোদন পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রাজিব এন্টারপ্রাইজ। এক কোটি ৮৫ লাখ টাকার চুক্তিতে ২০২২ সালের ৭ মে কাজ শুরু হয়। কাজের মেয়াদ ছিল এক বছর। মেয়াদ শেষে হলেও এখনো শেষ হয়নি কাজ। গত আড়াই বছরে কাজ হয়েছে ৬০ ভাগ। বর্তমানে এই সড়কের কাজ বন্ধ রয়েছে।

এদিকে, মৌমিতা এন্টারপ্রাইজ নামের আরেকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে রাজিব চৌধুরী ২০২২ সালের মে মাসে পাটলী ইউনিয়নের সাতহাল-কুড়িয়ান-গোয়ালভিটা সড়কের এক কিলোমিটার অংশ আরসিসি কাজের অনুমোদন পায়। এক কোটি ৩৭ লাখ টাকা চুক্তিতে এই কাজের মেয়াদ ছিল এক বছর। কিন্তু আড়াই বছরেও ওই সড়কে কোন কাজ হয় নি। ফলে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।

একইভাবে উপজেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ বিভাগ থেকে দুই বছর আগে পাঁচ কোটি টাকার কাজ বাগিয়ে নিয়ে ফেলে রেখে দুর্ভোগের সৃষ্টি করেছেন রাজিব আহমেদ। তিন প্যাকেজে পাঁচ কোটি টাকার কাজ নিলেও, গত জুন মাসে মেয়াদ শেষ হওয়া কাজ এখনো শেষ করেননি।

উপজেলা ত্রাণ কার্যালয় সূত্র জানায়, বিগত ১৫ বছরে ঠিকাদার রাজিব আহমেদ কয়েক কোটি টাকার কাজ করেন। সর্বশেষ তিনটি প্যাকেজে পাঁচ কোটি টাকার কাজ পান। এরমধ্যে একটি দুই কোটি ১১ লাখ, দ্বিতীয়টি দুই কোটি ও তৃতীয়টি ৯৭ লাখ টাকার। গত জুন মাসে এসব কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো শেষ হয়নি।

জগন্নাথপুর এলজিইডি ও ত্রাণ অফিসের একাধিক কর্মকর্তা—কর্মচারী জানান, রাজিব আহমেদকে কাজ আদায়ের জন্য ফোন দিলে তিনি ফোন ধরতেন না। কোন কোন সময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুট কে দিয়ে তদবির করাতেন। এ কারণে আইনি সুযোগ থাকলেও তাঁর কার্যাদেশ বাতিল করা যেতো না।

জগন্নাথপুর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মিজানুর রহমান জানান, দীর্ঘদিন হয় ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দে তিনটি ওয়াশব্লকের কাজ ফেলে রেখেছেন ঠিকাদার রাজিব। আমি যোগদান করে তাকে অনুরোধ করে আবার কাজ শুরু করিয়েছি।

এসব অভিযোগের জবাবে ঠিকাদার রাজিব চৌধুরী বললেন, জগন্নাথপুরে এতো টাকার কোনো কাজ আমি করিনি। তাহিরপুর উপজেলায় আমার কাজ চলছে। আমাকে হয়রানি করার জন্য ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন বললেন ঠিকাদার রাজিব শান্তিগঞ্জ, জগন্নাথপুর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় চারটি কাজ দীর্ঘদিন ধরে ফেলে রেখেছেন। এতে জনদুর্ভোগ তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি তার সঙ্গে কথা হয়েছে, তিনি বলেছেন কাজ শুরু করবেন। শীঘ্রই এসব কাজ শুরু না করলে তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

আজকের নলজুর/০২ডিসেম্বর২৪/আরএন

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরণের আরো খবর
© All rights reserved © 2023 আজকের নলজুর
Design and developed By: Syl Service BD