জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:-
বোরোধান চাষাবাদের প্রসিদ্ধ অঞ্চল খ্যাত সুনামগঞ্জ জেলার বিস্তৃত হাওর এলাকার মধ্যে অন্যতম জগন্নাথপুর উপজেলা। বৈশাখের সফল হিসেবে পরিচিত বোরোধান চলতি মৌসুমে জগন্নাথপুর উপজেলায় রোপণ শুরু হয়েছে। কৃষকেরা তীব্র শীত উপেক্ষা করে চারা উত্তোলন ও রোপণ করতে দেখা গেছে। ভোরবেলা কুয়াশাচ্ছন্ন থাকে, আর
কৃষকদের প্রতিনিয়ত শীতের এই সময়ে ঠান্ডা পানির সাথে লড়াই করেই বোরোধান রোপণ করতে হয়। উপজেলার সবচেয়ে বড় হাওর নলুয়া, মই হাওর সহ উপজেলায় ৮টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় পুরোদমে বোরোধান রোপণ শেষ পর্যায়ে রয়েছে । আগামী সপ্তাহের মধ্যেই শেষ হবে রোপণ।
জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ২০ হাজার ৪শত ২৩ হেক্টর জমিতে বোরোধান চাষাবাদ করা হবে। এরমধ্যে হাওর এলাকায় ১৪ হাজার ৪১০ হেক্টর ও হাওর ছাড়া ৬শত ১৩ হেক্টর খেতে বোরোধান রোপণ করা হবে। হাওরে ৯০% ও হাওর ছাড়া ৬৬% খেত রোপণ করা হয়েছে। এবছর ধান উৎপাদন লক্ষমাত্রা ১২৮ হাজার ৪৬৯ মেট্রিটন ও চাল ৮৫ হাজার ৬৪৬ মেট্রিটন উৎপাদন লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
জালালপুরের কৃষক জাহির আলী বলেন, আমরা কৃষক বারমাসই চাষের সাথে থাকি, ঠান্ডা বেশি হলেও খেত রোপণ করতে হবে। আলমপুরের কৃষক মঞ্জু মিয়া বলেন, ১০ বিঘা খেতে বোরোধান লাগাতে হবে, সকালে ঠান্ডা বেশি থাকে, রোপণ শ্রমিকরা সকালেই আসেন, তিনদিনের মধ্যেই রোপণ শেষ হবে। গোতগাঁও গ্রামের কৃষক আহমদ আলী বলেন, এখন বোরোধান রোপণের সময়, প্রতিবছর শীতের সময় রোপণ করি, ঠান্ডা যতোই হউক সময়মতো রোপণ শেষ করতে হবে। বাগময়না গ্রামের কৃষক আলমগীর মিয়া বলেন, সকাল থেকে সন্ধ্যা চাষের খেতে ব্যস্ত থাকতে হয়, ১৫ বিঘা খেত রোপণের জন্য প্রস্তুত করেছি, ঠান্ডার জন্য রোপণের শ্রমিকরা দেরিতে আসেন, তবুও আশাবাদী সময়মতো রোপণ শেষ হবে। উপজেলার হাওর সহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, শীত উপেক্ষা করে কৃষকেরা চারা উত্তোলন করে রোপণ করছেন।
জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কাওসার আহমেদ বলেন, কৃষকরা আনন্দের সাথে ধান রোপণ করতেছেন, হাওরে ৯০ ভাগ ও নন হাওরে ৬৬ ভাগ চারা রোপণ করা হয়েছে, এভাবে রোপণ করা হলে আশাবাদী ১৫ জানুয়ারির মধ্যেই রোপণ শেষ হবে। হাওরে ধান আগে লাগানো হয়, এখানে আগাম বন্যার সম্ভবনা থাকে, যত তারাতাড়ি রোপণ করা হবে, আগাম ধান কাটা শেষ হবে। গতবার বোরোধানের বাম্পার ফলন হয়েছে, এবার কৃষকেরা আগ্রহ নিয়ে চাষ করছেন। আমাদের কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে।
আজকের নলজুর/সারোয়ার/বিডিএন/১০-০১-২৫ইং