1. admin@ajkernaljur.com : admin :
জগন্নাথপুরে ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে কুশিয়ারা নদী পাড়ের মানুষ - আজকের নলজুর
২৭শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ১৩ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ| বর্ষাকাল| শুক্রবার| দুপুর ১২:৩৮|

জগন্নাথপুরে ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে কুশিয়ারা নদী পাড়ের মানুষ

রিপোর্টার
  • আপডেটের সময় : শুক্রবার, জানুয়ারি ১০, ২০২৫,
  • 37 দেখা হয়েছে

জগন্নাথপুর প্রতিনিধি:-

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ ও পাইলগাওঁ ইউনিয়নের কুশিয়ারা নন্দীর পাড়ের মানুষ ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত পার করছেন। কেউ কেউ বাপ-দাদার ভিটে সরিয়ে অন্য জায়গা চলে যাচ্ছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড কোন নজড় নেই।

জানা গেছে, কুশিয়ারা নদীর রানীগঞ্জ সেতুর জিরো পয়েন্ট থেকে পূর্ব জালালপুর, ভাঙ্গা বাড়ি, বাঘ ময়না, বড় পর্যন্ত থেমে থেমে নদী ভাঙছে। গত কয়েক মাসে নদীগর্ভে চলে গেছে তিন থেকে চার কিলোমিটার জায়গা। এতে কমপক্ষে ৪০টির বেশি ঘর অন্য জায়গা সরিয়ে নিতে হয়েছে। অনেকে খোলা জায়গায় বসবাস করছে।অনেকে নন্দীর পাড়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, পাইলগাঁও, রানীগঞ্জ ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামের আল আমিন, পাইলগাঁও শাপলা ব্রিক ফিল্টের মালিক ফারুক মিয়া,সহ অনেকে লোক অবৈধ ভাবে নন্দীর পাড় কেটে মাটি নিচ্চেন ও বিক্রি করছেন। এলাকার অনেকে অভিযোগ করেন প্রতিদিন আল আমিন নামে এক ব্যক্তি নন্দীর পাড় কেটে মাটি বিক্রি করছেন। তিনি প্রশাসন কে তোয়াক্কা না করে মাটি বিক্রি করছেন। বালিশ্রী, বাগ ময়না ও এলাকায় কুশিয়ারা ভাঙন চলছে। অনেকে বাড়ি-ঘর ভেঙে অন্য জায়গায় চলে যাচ্ছে। কেউ কেউ বাড়ির চাল খুলে অন্য জায়গায় রাখলেও খাম ও বেড়া লাগিয়ে রাখছে, যদি থামে নদীর ভাঙন।

এদিকে ভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন পাইলগাওঁ, রানীগঞ্জ ইউনিয়নের ৩ শতাধিক পরিবার। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে মসজিদ ও স্কুল। সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বিদ্যুতের খুঁটি। ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হচ্ছে। এতেও বন্ধ করা যাচ্ছে না নদীর ভাঙন রানীনগর গ্রামের বাসিন্দা প্রমদ দাস বলেন,ঘর ছিল। হঠাৎ ফাটল রাতে নদীর ভাঙনে সেই ঘর ডুবে গেছে। ঘর সরাতেও সময় লাগছে, তাই ঘরের দিকে নজর দিতে পারিনি, এখন আমার বাড়ি নদীতে।

রাণীনগর গ্রামের বুলাই রবিদাস বলেন নদীর পাড় প্রতিবছর কেটে নিচ্ছে কিছু ভূমি খেখু। তাই নদী ভাঙ্গনে অনেক ঘরবাড়ি নদীতে তুলিয়া গেছে। এখনো নদীর পাড় কেটে নেওয়াচ্ছে মাটি। মাটিগুলো বিভিন্ন লোকদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। কল্পনা রানী দাস বলেন কে করে দেবে আমাদের ঘর বাড়ি ? এই ছোট একটি ঘরে আমরা দুজন থাকি। হয়তো রাতে থাকতে পারব না। ঘর ভেঙে নিয়ে যাবে নদী। কীভাবে থাকব, কীভাবে চলব, কে আমাদের খাওয়াবে- বলতে পারছি না।

বালিশি গ্রামের আশরাফুল হক জানান, আমরা নদী ভাঙ্গনে মানববন্ধন করেছি, কিন্তু দুঃখের বিষয় পানি উন্নয়ন বোর্ড ও প্রশাসনের কোন সহযোগিতা পাচ্ছি না। চোরাই ভাবে নদীর পাড় কেটে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে।। আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক ব্যক্তি জানান নদীর পাড় কেটে মাটি বিক্রির করা হচ্চে তাদের সাথে ইউনিয়ন ভুমি অফিসে তশিলদার জড়িত আছেন বলে মনে করছেন। তাদের নাকের ডগায় প্রতিদিন নদীর পাড়কাটা হচ্ছে তারা কিছুই বলছেন না। তাদের কাছে গেলে উল্টো আরো ধমক দিয়ে দেন।

আল আমিন বলেন আমি আমার নামে বেড়িবাঁধ পেয়েছি, তাই মাটি নিচ্চি,উপজেলা ও ভুমি অফিসে লোক জানেন।
সোনাতলা বেড়িবাঁধের সভাপতি বর্তমান মেম্বার আবুল হোসেন বলেন, আল আমিন আমার বেড়িবাঁধে কেউ নয়। বেড়িবাঁধেব কাজের জন্য আল আমিন চুক্তি করে, মাটি দেওয়ার জন্য।। আমার বেড়িবাঁধ দেখিয়ে যদি মাটি বিক্রি করে, প্রশাসন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্তা নিলে আমার কোন আপওি নেই।

পাইলগাওঁ ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ নজমুদ্দিন
বলেন কুশিয়ারা নদীর পাড় ভেঙ্গে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত, নদীর পাড় কেটে মাটি বিক্রি হচ্চে, এতে এলাকার অনেক ঘরবাড়ি নদী ভাঙ্গনে তলিয়ে যাচ্ছে, আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করেছি কোন কাজ হয়নি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী সবুজ কুমার শিল বলেন, নদীর ভাঙন রোধে কিছু জায়গায় আমরা জিও ব্যাগ ফেলছি। নদীর পাড় থেকে অবৈধভাবে মাটি কেটে নিতে পারবে না। যারা নিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি
এছাড়া এ বছর ও এলাকায় নদীভাঙন রোধে কাজ চলছে। এরই মধ্যে আমরা একটি প্রকল্প তৈরি করে এটি অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছি। এটি পাস হলে ব্লক ও জিওব্যাগ ফেলে স্থায়ী একটি বেড়িবাঁধের কাজ শুরু করব।।

জগনাথপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি রিয়াদ বিন ইব্রাহিম ভূঞা ‍সা-আধ বলেন কুশিয়ারা নন্দীর পাড় কেটে মাটি বিক্রি হ্চ্চে শুনেছি আমরা দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব। নদীর পাড় কাটা যাবে না। আমি তশিলদার কে বলে দিয়েছি বিষয়টি দ্রুত দেখার জন্য।

আজকের নলজুর/গবিন্দ/বিডিএন/১০-০১-২৫ইং

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরণের আরো খবর
© All rights reserved © 2023 আজকের নলজুর
Design and developed By: Syl Service BD