1. admin@ajkernaljur.com : admin :
মুক্তিযুদ্ধে জগন্নাথপুর - আজকের নলজুর
২৭শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ১৩ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ| বর্ষাকাল| শুক্রবার| দুপুর ২:৩৬|

মুক্তিযুদ্ধে জগন্নাথপুর

রিপোর্টার
  • আপডেটের সময় : শনিবার, ডিসেম্বর ৯, ২০২৩,
  • 403 দেখা হয়েছে

মির্জা জুয়েল আমীন(লন্ডন থেকে):-

আট আউলিয়ার স্মৃতি বিজড়িত এক ঐতিহাসিক জনপদের নাম জগন্নাথপুর। একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধে এখানে চলেছে ইতিহাসের বর্বরতম গণহত্যা।

হানাদারদের নৃশংসতা ও রাজাকারদের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন এ অঞ্চলের লোকজন। থানার বিপুল সংখ্যক যুবক আইনজিবী এ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।

একাত্তরের ৩১আগষ্ট শ্রীরামশী ও ৮ সেপ্টেম্বর থানার প্রধান ব্যবসা কেন্দ্র রাণীগঞ্জ বাজারে হায়েনারা চালায় ভয়াবহ হত্যাকান্ড। শত শত মানুষকে সারিবদ্ধ-ভাবে দাঁড় করিয়ে মেশিন গানের মূর্হুমূর্হু গুলিতে প্রকম্পিত হয়ে উঠে আকাশ বাতাস। মূহুর্তের মধ্যে সেখানকার মাটিতে বয়ে যায় রক্তের বন্যা।

হায়েনারা ঐজগণ্য হত্যাকান্ড ঘটিয়েও ক্ষান্ত হয়নি। আগুন ধরিয়ে ভষ্মিভূত করে দেয় শ্রীরামশী, রাণীগঞ্জ বাজার ও ইকড়ছই মির্জাবাড়ী। এক সময় বন্ধ হয় তাদের নরহত্যার খেলা, লাশের উপর লাশ পড়ে থাকে। এ নারকীয় হত্যাযজ্ঞে দুটি বাজার পরিণত হয় মৃতপুরীতে।

সেই পৈশাচিক হত্যাকান্ড আজও এ অঞ্চলের মানুষের হৃদয়কে নাড়া দেয়। শহীদদের স্মরণে এ দু’টি স্থানেই গড়ে উঠেছে স্মৃতিসৌধ। এছাড়া আগুন দিয়ে ভস্মিভূত করা হয় মির্জাবাড়ীর ব্যারিষ্টার মির্জা আব্দুল মতিন, মির্জা আব্দুল ছত্তার, মির্জা সমুজ মিয়া, মির্জা হারুন রশিদের ঘরবাড়ি। লুট করে নেয়া হয় সবকিছু। এছাড়া থানার প্রতিটি গ্রামেই চলে পাক বাহিনী ও রাজাকারদের তান্ডবলীলা। ১১ নভেম্বর ১৯৭১ সালে মুক্ত হয় জগন্নাথপুর থানা।

থানার সাহসী যোদ্ধাদের কাছে ৪০/৫০ জন রাজাকার, পাকসেনা ও একজন দারোগা আত্মসমর্পন করে। জগন্নাথপুর থানার প্রথম স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন মরহুম ব্যারিষ্টার মির্জা আব্দুল মতিন।

মুক্তিযুদ্ধে এ থানায় গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছেন ব্যারিষ্টার মির্জা আব্দুল মতিন, শফিকুল হক চৌধুরী বাচ্চু, সাজ্জাদ হোসাইন, মির্জা আব্দুল ছত্তার, বাদল চৌধুরী, ইন্তাজ আলী, মাহবুবুর রহমান, আখলাকুর রহমান, রসরাজ বৈদ্য, মিজানুর রহমান, মানিক পাল, সিরাজুল ইসলাম, আব্দুল কাদির, আব্দুল গণিসহ অনেকেই।

জগন্নাথপুর থানার সিংহভাগ মানুষ যুক্তরাজ্যে বসবাস করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের তহবিল গঠনে মোটা অংকের দানই ছিল জগন্নাথপুর থানার প্রবাসীদের। ১৯৭১ সালে যুক্তরাজ্যে গঠিত স্টুডেন্ট এ্যাকশন কমিটির জয়েন্ট সেক্রেটারী ছিলেন জগন্নাথপুর থানার আব্দুল হাই খাঁন এবং নারিকেল তলা গ্রামের রেজিয়া বেগম।

তারা আমেরিকান দূতাবাসের সামনে ৭২ ঘন্টা অনশন ধর্মঘট করে স্বর্বর বাহিনীর নির্যাতনের প্রতিবাদ করেন। এ খবর পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় গুরুত্বের সাথে প্রকাশ পায়। জগন্নাথপুর থানার আব্দুল হান্নান চৌধুরী (দৈনিক সিলেটের ডাক সম্পাদক) ১৯৭১ সালে দিনাজপুর জেলা ও সেকশন জজের দায়িত্বে থাকাকালিন সেখান থেকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

তাকে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের আইন সচিব নিযুক্ত করা হলে সচিবালয়ে উপসচিব রেখে তিনি রণাঙ্গনে চলে যান।

মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য এডভোকেট আব্দুর রইছ এম পি, ব্যারিষ্টার মির্জা আব্দুল মতিন, শফিকুল হক চৌধুরী বাচ্চু, সুবেদার আবুল বশার চৌধুরীর কথা থানাবাসী চিরদিন স্বরণ রাখবে।

সহ-সম্পাদক: মির্জা জুয়েল আমিন, আজকের নলজুর পত্রিকা।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরণের আরো খবর
© All rights reserved © 2023 আজকের নলজুর
Design and developed By: Syl Service BD