1. admin@ajkernaljur.com : admin :
শ্রীমঙ্গলের পৌর মেয়র মো: মহসিন মিয়া মধু দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ছিলেন উপজেলা পাহারাদার - আজকের নলজুর
২৭শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ১৩ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ| বর্ষাকাল| শুক্রবার| সকাল ১০:৪৩|

শ্রীমঙ্গলের পৌর মেয়র মো: মহসিন মিয়া মধু দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ছিলেন উপজেলা পাহারাদার

রিপোর্টার
  • আপডেটের সময় : শনিবার, আগস্ট ১০, ২০২৪,
  • 166 দেখা হয়েছে

সালেহ আহমদ (স’লিপক):-

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়র মো. মহসিন মিয়া মধু দেশের বিদ্যমান অস্থিরতায় সাম্প্রদায়িক সম্পীতি বজায় রাখতে ছিলেন জনগনের জানমালের পাহারাদার। সোমবার (৫ আগষ্ট) শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর অরাজকতা দেখা দেয়। ক্রোধে উত্তেজিত জনতা থানা, দোকান পাট, বাসা বাড়িতে হামলা চালায়। আর এই হামলা থেকে সরকারী প্রতিষ্ঠান সহ জনগণের জানমাল রক্ষা করতে নিজের জীবন বাজী রেখে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করেন শ্রীঙ্গমল পৌরসভার মেয়র। শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ফোন পেয়ে ২টি গাড়ী তাঁর নিজ ড্রাইভার দিয়ে বাসায় এনে নিরাপদ রাখেন।

জানা যায়, শ্রীমঙ্গল থানায় ভাংচুরের খবর পেয়ে মেয়র মো. মহসিন মিয়া মধু থানায় গিয়ে অফিসার ইনচার্জকে নিরাপদ করা সহ হামলাকরীদেরকে শান্ত করেন। শান্তি সম্প্রীতি বজায় রাখতে সারা শহরে মাইকিং করান। তাঁর পৌর কাউন্সিলর সহ আত্নীয় স্বজন নিয়ে মানুষের জানমাল রক্ষা করতে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। লন্ডন থেকে বিএনপির নেতা তারেক রহমানও তাকে নির্দেশ দেন সম্প্রীতি বজায় রাখতে।

স্থানীয়রা জানান, শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর সারাদেশে আনন্দ উল্লাস করেন ছাত্র জনতা সহ বিভিন্ন দলমত ও জাতি ধর্মের মানুষ। এই আনন্দ উল্লাসের মধ্যখানেই একটি চক্র সারা দেশে রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি, ব্যক্তিগত সম্পত্তি এবং বিভিন্ন স্থাপনায় ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। শ্রীমঙ্গলেও একটি চক্র এই সুযোগ কাজে লাগায়।

শ্রীমঙ্গলের অনাকাঙ্ক্ষিত এই পরিস্থিতি দেখে তাৎক্ষণিক পরিবারের সদস্য, পৌর কাউন্সিলর, দলীয় নেতাকর্মী এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের সাথে নিয়ে মাঠে নামেন পৌরসভার মেয়র মো. মহসিন মিয়া মধু। উপজেলা পরিষদের রাষ্ট্রীয় ভবন, থানা কমপ্লেক্স, মানুষের ব্যক্তিগত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সহ সর্বসাধারণের জানমাল রক্ষায় নিজের সর্বস্ব দিয়ে দিনরাত কাজ করেন তিনি।

শ্রীমঙ্গল শহরের ক্যাথলিক মিশন রোডের খ্রিস্টান ধর্মালম্বীদের উপাসনালয় (মিশন) এর সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে পরিদর্শনে যান শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়র মো. মহসিন মিয়া মধু। রাত জেগে শ্রীমঙ্গল শহরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য স্থাপনা পাহারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. কামাল হোসেনের অফিসে রাত ১২টায় এ সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ভোররাত পর্যন্ত জেগে থাকার পরও সকাল ৬টা থেকে শ্রীমঙ্গল শহরের বিভিন্ন সংখ্যালঘু পরিবার, মন্দির ও মিশন পরিদর্শন করেন শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়র।

বিভিন্ন সময়ে পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন পৌর কাউন্সিলর মীর এম এ সালাম, আব্দুল জব্বার আজাদ, শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সভাপতি বিশ্বজ্যোতি চৌধুরীর নেতৃত্বে একদল সংবাদকর্মী, বিএনপি নেতা ইয়াকুব আলী, পৌর কাউন্সিলর কাজী আব্দুল করিম, মীর এম এ সালাম, আলকাছ মিয়া, চয়ন রায়, বিএনপি নেতা এম এ কাইয়ুম সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

জানা গেছে, বিভিন্ন সময়ে মেয়র মো. মহসিন মিয়া মধু শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিন্দুরখান ইউনিয়নের সিন্দুরখান বাজার, আশিদ্রোন ইউনিয়নের টিকরিয়া বাজার, আইয়ুব মার্কেট এলাকা, শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের শাহজি বাজার, কালাপুর ইউনিয়নের ভৈরবগঞ্জ বাজার, কালাপুর বাজার ও কাকিয়া বাজার পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষদের নির্বিঘ্নে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা এবং সাধারণ জীবন যাপনের আহ্বান জানান।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মো. আবু তালেব বলেন, আমার অনুরোধে নিজের জীবন বাজি রেখে রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি আমার নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারি গাড়ি এবং সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) এর সরকারি গাড়ির সুরক্ষা দেওয়ার জন্য নিজের বাসভবনে নিয়ে যান। এই উদ্যোগ নেওয়ার কারণে দুষ্টু চক্র, দুষ্কৃতিকারীদের হাত থেকে রক্ষা পায় গাড়ি দুটি ও সরকারি বিভিন্ন স্থাপনা। এছাড়াও শ্রীমঙ্গল উপজেলার নিরাপত্তা বিষয়ক সার্বিক বিষয়ে প্রশাসনের লোকজন সার্বক্ষণিক মেয়র এর সাথে যোগাযোগ রাখছেন।

শ্রীমঙ্গল পৌর মেয়র মো. মহসিন মিয়া মধু বলেন, শ্রীমঙ্গলের কোন ধর্মীয় প্রতিষ্টানের ক্ষতি হতে দেইনি। আমরা লজ্জ্বিত বর্তমান প্রজন্মের কাছে। তারা আমাদের পথ দেখিয়েছে। আমরা তাদের জীবন গঁড়ার কথা ছিল। আজ তারা আমাদেরে শান্তিতে মরার জন্য জীবন গঁড়ে দিয়েছে। যারা জীবন দিয়েছে তাদের আত্নার মাগফেরাত কামনা করছি।

শ্রীমঙ্গল আওয়ামীলীগ অধ্যুষিত এলাকা। এখনে আমি বিএপির লোক হয়ে মেয়র নির্বাচিত হই। তাই এই দুঃসময়ে তাদের দেনা শোধ করেছি। বিগত দিনে যারা আমার বাসায় ভাংচুর করেছিল, আমি তাদের বাসায় পাহারা দিয়েছি। হরিপদ দাদা আমাকে ফোন করে সাহায্য চান। আমি বলেছি ভয়ের কিছু নাই। আমি আপনার বাসার দারোয়ান হয়ে থাকবো, তবু কোন ক্ষতি হতে দেবো না। একটি মেয়ে আমাকে ফোন করে বলে, তার বাসা তালা মেরে দিয়েছে।

আমি আমার ভাইকে পাঠিয়ে তালা খোলে দিয়েছি। আমি শিক্ষক, ছাত্র, সাংবাদিক সহ সর্বস্থরের মানুষ নিয়ে বৈঠক করে ধ্বংসাত্মক কান্ড না করে দেশ গঁড়ার আহব্বান করেছি। বর্তমানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতির লক্ষ্যে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। কোন দুষ্কৃতিকারী যদি কোন প্রকার জালমালের উপর আঘাত আনার চেষ্টা করে তাদেরকে আটক করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার আহবান জানান তিনি।

আজকের নলজুর/১০আগস্ট২৪/জু:আ:হা:

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরণের আরো খবর
© All rights reserved © 2023 আজকের নলজুর
Design and developed By: Syl Service BD